Site icon Tourism Gurukul [ পর্যটন গুরুকুল ] GOLN

সিলেটের গোয়াইনঘাটের দর্শনীয় স্থান

সিলেটের গোয়াইনঘাটের দর্শনীয় স্থান

গোয়াইনঘাট বাংলাদেশের সিলেট জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।

এই উপজেলার আয়তন ৪৮১.১৩ বর্গ কিলোমিটার। গোয়াইনঘাটের উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য, দক্ষিণে সিলেট সদর উপজেলাজৈন্তাপুর উপজেলা, পূর্বে জৈন্তাপুর উপজেলা ও পশ্চিমে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা। প্রধান নদী সারি নদী, গোয়ানইন নদী, পিয়ান নদী।

গোয়াইনঘাটের দর্শনীয় স্থান

গোয়াইনঘাটের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট, পান্তুমাই, লালাখাল, লক্ষ্মণছড়া, সাদাপাথর, বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কসহ উল্লেখযোগ্য। এখানে জাফলং, ফতেপুর ও গুলনী চা বাগান নামে ৩টি চা বাগান রয়েছে। তামাবিল স্থল বন্দর এই উপজেলায় অবস্থিত

পিয়াইন নদী, জাফলং, সিলেট
ছবি: উইকিপিডিয়া

জাফলং

প্রকৃতির এক অপূর্ব দান, প্রাকৃ্তিক সৌ্নদর্যের অপার লীলাভূমি জাফলং। পাথরের উপর গতিময় স্বচ্ছ পানির রুপালী আভা, নিস্তব্ধ নিঝুম সবুজে আবৃত পাহাড়ে ঘেরা এক স্ব্প্নিল জগৎ এই জাফলং।
দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র চুনাপাথরের খনি, সমতল ভূমির চা-বাগান, বিখ্যাত খাসিয়া পান-সুপারির বাগান, খাসিয়া পল্লীর এবং খসিয়াদের কৃ্ষ্টি-কালচার জাফলং পর্যটন কেন্দ্রকে করেছে সমৃদ্ধ।
শুস্ক ও শীত মৌসুমে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭০০-৯০০ জন দেশি-বিদেশি পর্যটক জাফলংয়ের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করে।

জাফলং
ছবি: উইকিপিডিয়া

জাফলং কোথায় অবস্থিত?

জাফলং সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার জফলং নামক স্থানে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে এর অবস্থান।

কিভাবে জাফলং যাওয়া যায়?

সিলেট হতে সিলেট তামাবিল মহাসড়কে ৫৬ কিলোমিটার, গোয়াইনঘাট উপজেলা সদর হতে সারিঘাট হয়ে ৩২ কিলোমিটার এবং রাধানগর হয়ে ১২ কিলোমিটার দূরে জাফলং।

যাতায়াতের মাধ্যম: বাস, মাইক্রোবাস, জীপ, সিএনজি ও ট্যাক্সি।

বিছনাকান্দি

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে মেঘালয়ের কো ঘেঁষে প্রকৃ্তি যেন মনের মাধূরী মিশিয়ে নিজ হাতে তৈরী করেছে পর্যটন স্পট বিছনাকান্দিকে। মেঘালয় থেকে নেমে আশা চকচকে শীতল পানি এবং পরপর অবস্থিত সাতটি সবুজ পাহাড়ের হাতছানি অজান্তেই মনে দোলা দিয়ে যায়। পাহাড়ের বুক চিরে মেমে আশা মন মনমুগ্ধকর ঝরণা, পাথরের বিছানার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া স্রোত মনকে টেনে নেয় প্রকৃ্তির গহীনে।
শুস্ক ও শীত মৌসুমে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪০০-৫০০ জন দেশি-বিদেশি পর্যটক বিছনাকান্দির সৌন্দর্য অবলোকন করে তাঁদের মনকে তৃপ্ত করে।

বিছানাকান্দি
ছবি: উইকিপিডিয়া

বিছানাকান্দি কোথায় অবস্থিত?

গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নে বিছানাকান্দি অবস্থিত।

কিভাবে বিছানাকান্দি যাওয়া যায়?

সিলেট হতে সালুটিকর হয়ে সড়কপথে হাদারপার বাজার পর্যন্ত ৪৬ কিলোমিটার। গোয়াইনঘাট-সারিঘাট হয়ে হাদারপার বাজার পর্যন্ত ৭৩ কিলোমিটার। গোয়াইনঘাট উপজেলা সদর হতে হাদারপার বাজার পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার।
হাদারপার বাজার হতে বিছনাকান্দি ৪ কিলোমিটার।

যাতায়াতের মাধ্যম: হাদারপার বাজার পর্যন্ত বাস, মাইক্রোবাস, জীপ, সিএনজি ও ট্যাক্সি। হাদারপার বাজার হতে নৌকা।

রাতারগুল জলাবন
ছবি: উইকিপিডিয়া

রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট

প্রকৃতির ব্যতিক্রমী সৃষ্টি রাতারগুল সোয়াম ফরেস্ট একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট। পানিতে অর্ধ নিমজ্জিত হিজল, করচ, বরুনা, বেত আর মুর্তার ঘন ঝোপে প্রায় দূর্ভেদ্য উপমহাদেশের একমাত্র মিঠা পানির সোয়াম ফরেস্ট এই রাতারগুল। শীতল বাতাস, পাখির কলতান, নয়নাভিরাম দৃশ্য আর নৌকাযোগে নিঃশব্দে ঘুরে বেড়ানো- এ যেন এক স্বর্গ রাজ্য।
প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৫০-২০০ জন দেশি-বিদেশি পর্যটক রাতারগুল সোয়াম ফরেস্টের সৌন্দর্য অবলোকন করে তাঁদের মনকে তৃপ্ত করে।

ওয়াচ টাওয়ার থেকে জলাবনের দৃশ্য
ছবি: উইকিপিডিয়া

রাতারগুল সোয়াম ফরেস্ট কোথায় অবস্থিত?

গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নে রাতারগুল সোয়াম ফরেস্ট আবস্থিত।

কিভাবে রাতারগুল সোয়াম ফরেস্ট যাওয়া যায়?

পর্যটন স্পট রাতারগুল সোয়াম ফরেস্ট: সিলেট হতে সড়কপথে ৩৫ কিলোমিটার, গোয়াইনঘাট উপজেলা সদর হতে ৩০ কিলোমিটার।
যাতায়াতের মাধ্যম: বাস, মাইক্রোবাস, জীপ, সিএনজি ও ট্যাক্সি।

পাংতুমাই
ছবি: উইকিপিডিয়া

পাংতুমাই

পাংতুমাই সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নে অবস্থিত একটি গ্রাম। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের গহীন অরণ্যের কোল ঘেঁষে বাংলাদেশের বুকে নেমে এসেছে অপরূপ সুন্দর এক ঝরনাধারা।
ঝরনাটি প্রতিবেশী দেশ ভারতের মধ্যে পড়লেও পিয়াইন নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে খুব কাছ থেকে উপভোগ করা যায় ঝরনাটি। সীমান্তের কাছাকাছি না গিয়েও ঝরনাটির সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
স্থানীয়রা ঝরনাটিকে ফাটাছড়ির ঝরনা বা বড়হিল ঝরনাও বলেন।

মেঘালয় রাজ্যের সারি সারি পাহাড়, ঝর্ণা, ঝর্ণা থেকে বয়ে আসা পানির স্রোতধারা, আর দিগন্ত বিস্তৃত চারণভূমি দেখা যায় এই গ্রামটি থেকে। পান্তুমাই গ্রামকে যদিও অনেকে ‘পাংথুমাই’ বলে ডাকে কিন্তু এর সঠিক উচ্চারণ “পান্তুমাই” ।

পাংতুমাই কোথায় অবস্থিত?

জাফলং থেকে প্রায় ২০-২৫ কিমি দূরে পাংতুমাই। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাহাড়ের নিচে, একেবারে সীমান্ত ঘেঁষা এই গ্রামটির অবস্থান।

কিভাবে পাংতুমাই যাওয়া যায়?

ঢাকা থেকে সিলেট গিয়ে আম্বরখানা পয়েন্ট থেকে সিএনজি ট্যাক্সি নিয়ে গোয়াইনঘাট বাজারে থানা সংলগ্ন বাজারে গিয়ে ট্যাক্সির সাহায্যে এখানে আসা যায়। পাংথুমাইয়ে যাওয়া যায় দুটি রাস্তায়। একটি হচ্ছে গোয়াইনঘাটের সালুটিকর হয়ে আর অন্যটি জৈন্তাপুরের সারিঘাট হয়ে।
যাতায়াতের মাধ্যম: বাস, মাইক্রোবাস, জীপ, সিএনজি ও ট্যাক্সি।

Exit mobile version