Site icon Tourism Gurukul [ পর্যটন গুরুকুল ] GOLN

প্রকৃতির কন্যা জাফলং ভ্রমণের সকল তথ্য – ভ্রমণ গাইড

প্রকৃতির কন্যা জাফলং ভ্রমণের সকল তথ্য

জাফলং (Jaflong) প্রকৃতির কন্যা হিসাবে দেশজুড়ে পরিচিত। সিলেট জেলার দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে জাফলং সবার পছন্দ। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষা প্রকৃতির দানে রূপের পসরা সাজিয়ে আছে জাফলং।

পাথরের উপর দিয়ে বয়ে চলা পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ পানির ধারা, ঝুলন্ত ডাউকি ব্রিজ, উঁচু উঁচু পাহাড়ে সাদা মেঘের খেলা জাফলংকে করেছে অনন্য। একেক ঋতুতে একেক রকম রূপের প্রকাশ ঘটায়, যা পর্যটকদেরকে ভ্রমণের জন্য আগ্রহী করে রাখে।

ছবি: উইকিপিডিয়া

 

জাফলং ভ্রমণ সম্পর্কিত প্রশ্ন

পিয়াইন নদী | ছবি: উইকিপিডিয়া

 

জাফলং পরিচিতি

জাফলং, বাংলাদেশের সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার অন্তর্গত, একটি পর্যটনস্থল। জাফলং, সিলেট শহর থেকে ৬২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে , ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষে খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত, এবং এখানে পাহাড় আর নদীর অপূর্ব সম্মিলন বলে এই এলাকা বাংলাদেশের অন্যতম একটি পর্যটনস্থল হিসেবে পরিচিত।

পর্যটনের সাথে জাফলং পাথরের জন্যও বিখ্যাত। শ্রমজীবি মানুষেরা পাথরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে সেই বহু বছর যাবত৷

ইতিহাস

ঐতিহাসিকদের মতে বহু হাজার বছর ধরে জাফলং ছিল খাসিয়া জৈন্তা-রাজার অধীনে থাকা এক নির্জন বনভূমি। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে জমিদারী প্রথার বিলুপ্তির মধ্য দিয়ে খাসিয়া-জৈন্তা রাজ্যের অবসান ঘটলেও বেশ কয়েক বছর জাফলংয়ের বিস্তীর্ণ এলাকা পতিতও পড়েছিল।

পরবর্তিতে ব্যবসায়ীরা পাথরের সন্ধানে বিভিন্ন এলাকা থেকে নৌপথে জাফলং আসতে শুরু করেন, আর পাথর ব্যবসার প্রসার ঘটতে থাকলে একসময় গড়ে ওঠে নতুন জনবসতি।

 

গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

জাফলংয়ের দর্শনীয় স্থান

জাফলং-এর বাংলাদেশ সীমান্তে দাঁড়ালে ভারত সীমান্ত-অভ্যন্তরে থাকা উঁচু উঁচু পাহাড়শ্রেণী দেখা যায়। এসব পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝরণা পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। এছাড়া ভারতের ডাউকি বন্দরের ঝুলন্ত সেতুও আকর্ষণ করে অনেককে। এছাড়া সর্পিলাকারে বয়ে চলা ডাওকি নদীও টানে পর্যটকদের।

মৌসুমী বায়ুপ্রবাহের ফলে ভারত সীমান্তে প্রবল বৃষ্টিপাত হওয়ায় নদীর স্রোত বেড়ে গেলে নদী ফিরে পায় তার প্রাণ, আর হয়ে ওঠে আরো মনোরম। ডাওকি নদীর পানির স্বচ্ছতাও জাফলং-এর অন্যতম আকর্ষণ।

 

বিজিবি ক্যাম্প থেকে পাহাড়ের দৃশ্য | ছবি: উইকিপিডিয়া

 

জাফলং কোথায় অবস্থিত?

বাংলাদেশের সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকায় জাফলংয়ের অপর পাশে ভারতের ডাওকি অঞ্চল। ডাওকি অঞ্চলের পাহাড় থেকে ডাওকি নদী এখান দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। মূলত পিয়াইন নদীর অববাহিকায় জাফলং অবস্থিত।

সিলেট জেলার জাফলং-তামাবিল-লালখান অঞ্চলে রয়েছে পাহাড়ী উত্তলভঙ্গ। এই উত্তলভঙ্গে পাললিক শিলা প্রকটিত হয়ে আছে, তাই ওখানে বেশ কয়েকবার ভূতাত্ত্বিক জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে।

 

| ছবি: উইকিপিডিয়া

 

জাফলং কখন যাবেন?

জাফলং সব সময়েই যাওয়া যায়। একেক ঋতুতে এটি একেক রূপ ধারণ করে। শীত ও বর্ষা মওসুমের সৌন্দর্যের রূপ ভিন্ন। বর্ষায় রূপ লাবণ্য যেন ভিন্ন মাত্রায় ফুটে উঠে। সে সময়ই এর পূর্ণ সৌন্দর্য দেখা যায়। ধূলি ধূসরিত পরিবেশ হয়ে উঠে স্বচ্ছ। স্নিগ্ধ পরিবেশে শ্বাস-নি:শ্বাসে থাকে ফুরফুরে ভাব। খাসিয়া পাহাড়ের সবুজাভ চূড়ায় তুলার মত মেঘরাজির বিচরণ এবং যখন-তখন অঝোর ধারায় বৃষ্টি পাহাড়ি পথ হয়ে উঠে বিপদ সংকুল-সে যেন এক ভিন্ন শিহরণ। সেই সঙ্গে কয়েক হাজার ফুট উপর থেকে নেমে আসা সফেদ ঝর্ণাধারার দৃশ্য যে কারোরই নয়ন জুড়ায়।

জাফলং যাওয়ার সব থেকে ভালো সময় বর্ষাকাল। তবে খেয়াল রাখতে হয়ে যেন তা মাঝ বর্ষায় না হয়। তখন বন্যায় সব কিছু ডুবে যায়। সব থেকে ভালো হয় বর্ষাকাল যখন শুরু হচ্ছে অথবা শেষ হচ্ছে তখন। এই হিসাবে জাফলং ভ্রমণের জন্য সেরা সময় মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে জুনের মাঝামাঝি।

 

নদীর মনোরম দৃশ্য | ছবি: উইকিপিডিয়া

 

কিভাবে জাফলং যাওয়া যায়?

সিলেট জেলা শহর থেকে তামাবিল মহাসড়কে জাফলংয়ের দূরত্ব মাত্র ৫৬ কিলোমিটার, গোয়াইনঘাট উপজেলা সদর হতে সারিঘাট হয়ে ৩২ কিলোমিটার এবং রাধানগর হয়ে ১২ কিলোমিটার।

সিলেট থেকে যাতায়াত:

সিলেট থেকে আপনি বাস/ মাইক্রোবাস/ সিএনজি চালিত অটোরিকশায় যেতে পারেন জাফলংয়ে। সময় লাগবে ১ ঘণ্টা হতে ১.৩০ ঘণ্টা।

সিলেটে থেকে বাস, মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকশা বা লেগুনায় (হিউম্যান হলার) যাওয়া যায় জাফলংয়ে। জাফলং যেতে জনপ্রতি বাস ভাড়া পড়বে ৮০ টাকা। যাওয়া-আসার জন্য মাইক্রোবাসের ভাড়া পড়বে ৩০০০-৩৫০০ টাকা। সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া পড়বে ১০০০-১২০০ টাকা। সিলেট শহরের যে কোনো অটোরিকশা বা মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড থেকে গাড়ি রিজার্ভ করে যাওয়া যাবে জাফলংয়ে।

 

যাতায়াতের মাধ্যম:

বাস, মাইক্রোবাস, জীপ, সিএনজি ও ট্যাক্সি।

 

কোথায় থাকবেন?

গেষ্ট হাউজ ও রেষ্ট হাউজের তথ্য:

 

কোথায় খাবেন?

জাফলং এ পর্যটকদের খাওয়ার জন্য বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট রয়েছে।

সূর্যাস্তের সময় | ছবি: উইকিপিডিয়া

 

ভ্রমণকালে পরামর্শ

 

গ্যালারি

 

আশেপাশের আকর্ষণ

Exit mobile version