মুসলিম পূর্ব যুগে বর্তমান ঢাকা জেলা অঞ্চল ‘বঙ্গ’ নামে পরিচিত প্রশাসনিক অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত ছিল। এর কিয়দংশ কখনো কখনো সমতট এবং কখনো কখনো হরিকল নামে পরিচিত ছিল।
মোঘল যুগের পূর্বে বাংলার হিন্দু ও মুসলিম শাসকেরা ঢাকার চারিদিকের বিভিন্ন অবস্থানে তাদের রাজধানী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এসব রাজধানী নগরীর কয়েকটি নিদর্শন এখনো বিক্রমপুর, ভাওয়াল ও সোনারগাঁওয়ে দেখা যায়। ১৫৭৫ সালে মোঘলরা পাঠান সুলতানের কাছ থেকে বাংলার শাসনভার ছিনিয়ে নিলেও তাদেরকে বাংলার ভূস্বামী বা ভূঁইয়াদেরকে নিয়ন্ত্রণে রাখবার জন্য যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। ১৬১০ খ্রিষ্টাব্দে প্রাদেশিক রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর প্রায় একশত বছর ঢাকার মর্যাদা অক্ষুণ্ণ ছিল।
ঢাকা ভ্রমণ গাইড
পরবর্তী সুবাহদার শাহ সুজা ঢাকায় নির্মাণ কর্মকাণ্ড শুরু করেন। শাহ সুজার দীউয়ান মীর আবুল কাশিম ১৬৪৫ খ্রিষ্টাব্দে বড় নামে একটি সুপ্রশস্ত ইমারত নির্মাণ করেছিলেন। ইমারতটির অবস্থান বুড়িগঙ্গার তীরে এবং বর্তমান চকবাজারের দক্ষিণে।
ঢাকার ইতিহাসে বেশ কয়েকটি নির্মাণ কাজের সঙ্গে মীরজুমলা নাম জড়িয়ে আছে, প্রথমে মীরজুমলার গেট পরবর্তী সময়ে যা রমনা গেট নামে পরিচিত হয়। কার্জন হল এর কাছাকাছি ও পুরাতন হাইকোর্ট ভবনের পশ্চিমে ময়মনসিংহ রোডে গেটটি অবস্থিত।
পরবর্তী সুবাদার শায়েস্তা খান ছিলেন একজন খ্যাতিমান নির্মাতা। অবশ্য তিনি একটি কাটরাও নির্মাণ করেন। এটি ছোট কাটরা নামে পরিচিত, শাহ সুজার বড় কাটরা থেকে পৃথক করার জন্য এ নামকরণ। তিনি বেশ কয়েকটি মসজিদ ও সমাধিসৌধও নির্মাণ করেন। মসজিদ গুলির মধ্যে চকবাজার মসজিদ, বাবুবাজার মসজিদ ও সাতগম্বুজ মসজিদ বিখ্যাত। সমাধিগুলির মধ্যে সবচাইতে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বিবি পরীর সমাধি।
নদীপথের পাশে অবস্থানের কারণে ঢাকা প্রাক-মোঘল যুগেই স্থানীয় বাণিজ্যের কেন্দ্র ছিল। কেননা ঢাকা ছিল একটি উৎপাদন কেন্দ্র।
এখানে উৎপাদিত সুতিবস্ত্র উচ্চমান সম্পন্ন এবং বহির্বিশ্বে ছিল এর প্রচুর চাহিদা। মসলিন নামে পরিচিত বিভিন্ন ধরনের সুতিবস্ত্র বাইরে রপ্তানি হতো। এ সব ক্রয়ের জন্য ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো আমদানি করত প্রচুর স্বর্ণ ও রৌপ্য পিন্ড।
বাংলার নওয়াবদের রাজনৈতিক ক্ষমতার পতন এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির উত্থান আঠারো শতকের শেষভাগে ঢাকার প্রশাসনিক গুরুত্বকে ম্লান করে দেয়। উপরন্তু, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাণিজ্যিক ও উৎপাদন নীতি নগরীর আর্থিক ভিত্তিকে ধ্বংস করে দেয়।
উন্নয়নের নতুন ধারা এবং সমৃদ্ধির নতুন যুগের সূত্রপাতের মাধ্যমে ১৮৪০- এর দশক নগর ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করে। নগর উন্নয়নের এ যাত্রা তখন থেকেই অব্যাহতভাবে চলতে থাকে।
প্রশাসনিক ক্রমবৃদ্ধি ইতঃপূর্বে ঢাকা জেলা প্রশাসনের কেন্দ্র ছিল। এটি ১৮২৯ সালে ঢাকা বিভাগ নামে একটি বৃহৎ বিভাগের সদর দফতরে পরিণত হয়। এরপর ঢাকার প্রশাসনিক গুরুত্ব বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং ১৮৮৫ সালের মধ্যে বঙ্গপ্রদেশে কলকাতার পরে ঢাকা নগরীকে সর্ববৃহৎ বেসামরিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়।
১৯০৫-১১ সালের দিকে ঢাকার প্রশাসনিক গুরুত্ব নাটকীয়ভাবে আরও বৃদ্ধি পায় যখন এটিকে পূর্ব বাংলা ও আসাম নামে নতুন প্রদেশের রাজধানী করা হয়। একটি হাইকোর্ট এবং একটি সচিবালয়সহ একজন লেফটেন্যান্ট গভর্নর নিযুক্ত করা হয়।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান এবং স্বাধীন পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার পর পূর্ব বাংলা নামে নতুন প্রদেশের রাজধানী হওয়ায় ঢাকার উত্থানে অধিকতর স্থায়ী উন্নয়ন সাধিত হয়। এ সময় হতে ঢাকা শুধু এ নতুন প্রদেশের প্রশাসনিক সদর দফতরই ছিল না বরং এখানে আইন পরিষদ এবং জাতীয় সংসদের অধিবেশন বসত।
অনেক সংগ্রাম, ত্যাগ এবং রক্তের বিনিময়ে নয়মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে ঢাকা রাজনৈতিক , প্রশাসনিক কার্যকলাপ এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্ররূপে মর্যাদা লাভ করে।
এক নজরে ঢাকা জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ
ঢাকার দর্শনীয় স্থান
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (কলাভবন)
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
- লালবাগ কেল্লা
- ঢাকেশ্বরী মন্দির
- আহসান মঞ্জিল
- হোসেনী দালান
- ছোট কাটরা
- বড় কাটরা
- কার্জন হল
- ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ভবন (পুরাতন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলা ভবন)
- সাত গম্বুজ মসজিদ
- তারা মসজিদ
- ঢাকা গেইট
- পরীবিবির মাজার
- বাহাদুর শাহ পার্ক
- নর্থব্রুক হল
- খান মোহাম্মদ মৃধা মসজিদ
- মুসা খান মসজিদ
- রমনা উদ্যান
- সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান
- জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান, বাংলাদেশ
- ঢাকা শিশু পার্ক
- ঢাকা চিড়িয়াখানা
- বাংলাদেশ জাতীয় যাদুঘর
- মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর
- বলধা গার্ডেন
- রোজ গার্ডেন
- বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার
- বুড়িগঙ্গা নদী
- তুরাগ নদী
- বালু নদী
- বংশী নদী
- ইছামতি নদী
- জাতীয় শহীদ মিনার
- শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ (রায়ের বাজার)
- অপরাজেয় বাংলা (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)
- আসাদ গেট
- তিন নেতার মাজার
- জাতীয় সংসদ ভবন
- বাংলাদেশ ব্যাংক ভবন
- বসুন্ধরা সিটি
- যমুনা ফিউচার পার্ক
- হাতিরঝিল
দোহার উপজেলার দর্শনীয় স্থান
- নুরুল্লাহপুর ওরস শরীফ এর মেলা (সুন্দরীপাড়া)
- মিনি কক্সবাজার খ্যাত মৈনট ঘাট
- মিনি পতেঙ্গা নামে পরিচিত পদ্মাপাড়ের বাহ্রাঘাট
- কোঠাবাড়ি বিল
- পদ্মাপাড়ের নারিশা
- আড়িয়াল বিল (নিকড়া)
- ডাক বাংলো (মুকসুদপুর)
- দুবলী হতে নবাবগঞ্জ সড়ক, সাইনপুকুর বড়বাড়ি
- কাটাখালী পাক দরবার শরীফের উরস উপলক্ষে সুফি অনুসারীদের মাহফিল ও মেলা (২১ শে ফাল্গুন, ৪ঠা মার্চ)
- নারিশা ডাক বাংলো (পদ্মার পাড়), নারেশা ইউনিয়ন, দোহার
- মধুর চর পদ্মার পাড়, সুতারপাড়া, দোহার, ঢাকা
- পদ্মার বালুচর
নবাবগঞ্জ উপজেলার দর্শনীয় স্থান
- সোনাবাজু বেড়িবাঁধ
- ঐতিহ্যবাহী জজ বাড়ি
- কোকিলপেয়ারি জমিদার বাড়ি
- বৌদ্ধ মন্দির
- খেলারাম দাতার মন্দির
- খেলারামদার বাড়ি (আন্ধার কোঠা)
- আদনান প্যালেস
- আনসার ভি.ডি.পি ক্যাম্প, গোপালপুর, কলাকোপা
- উকিলবাড়ি, গোপালপুর, কলাকোপা
- ব্রজ নিকেতন (জজ বাড়ি), গোপালপুর, কলাকোপা (কোকিলপেয়ারী জমিদার বাড়ি)
- কলাকোপা রথখোলা, রাজারামপুর, গোপালপুর
- নবাবগঞ্জ চৌরঙ্গী মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর্য, নবাবগঞ্জ, গোপালপুর
- নবাবগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, নবাবগঞ্জ, গোপালপুর
- কালিগঙ্গা নদী
- ইছামতি নদী
- পদ্মা নদী
- ধলেম্বরী নদী।
- শাহী ভাঙা মসজিদ
- সাত মাথার মূর্তি
- জপমালা রানীর গীর্জা, হাসনাবাদ, বান্দুরা ইউনিয়ন
- আফাজউদ্দিন শাহ্ এর মাজার, গালিমপুর
- মহাকবি কায়কোবাদের বাড়ী, আগলা পূর্বপাড়া, আগলা ইউনিয়ন নবাবগঞ্জ।
- প্যালেস পার্ক, মহাজনপুর, কলাকোপা
- বক্তারনগর পুরাতন জমিদার বাড়ী, পাঞ্জপহরী, শিকারীপাড়া, নবাবগঞ্জ, ঢাকা
- জয়কৃষ্ণপুর জমিদার বাড়ী, জয়কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন
- শিব বাড়ী মন্দির, হরিষকূল, নবাবগঞ্জ, ঢাকা
- সাধু আন্তনীর গীর্জা, বক্সনগর খ্রীস্টানপাড়া, বক্সনগর
- বাহ্রা জমিদার যামিনীকান্ত দে সরকার এর জমিদার বাড়ি, বাহ্রা
- কৈলাইল রওশন গার্ডেন, কৈলাইল, নবাবগঞ্জ, ঢাকা
কেরানীগঞ্জ উপজেলার দর্শনীয় স্থান
- কন্টেইনার পোর্ট, পানগাঁও, দক্ষিন কেরানীগঞ্জ, ঢাকা
- জিঞ্জিরা প্রাসাদ, জিনজিরা
- বুড়িগঙ্গা নদী
- দ্বিতীয় বুড়িগঙ্গা ব্রিজ, আগানগর ও নয়াবাজারের মাঝামাজি এই ব্রীজটি অবস্থান
- প্রথম ধলেশ্বরী সেতু
- ধলেশ্বরী নদীর পাড়
- ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কেরানীগঞ্জ
- বসুন্ধরা পার্ক, হাসনাবাদ, বসুন্ধরা, দক্ষিন কেরানীগঞ্জ, ঢাকা
- ছায়া নীড় কমিউনিটি এবং পিকনিক স্পট, আটি পাচঁদানা, আটি, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা
- বামনশুর দেওয়ান বাড়ী, বামনশুর নাগদা, আটি, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা
সাভার উপজেলার দর্শনীয় স্থান
- জাতীয় স্মৃতিসৌধ
- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
- নন্দন পার্ক, সাভার, আশুলিয়া, বাড়ইপাড়া
- ফ্যান্টাসী কিংডম
- অরণ্যালয় মিনি চিড়িয়াখানা, মিলিটারি ফার্ম, সাভার
- তুরাগ নদী
- ধলেশ্বরী নদী
- বুড়িগঙ্গা নদী
- বংশী নদী
- গাজীখালী নদী
- কর্ণতলী নদী
- সাপের বাজার, পোড়া বাড়ী
- যমুনা ন্যাচারাল পার্ক
- রাজা হরিশচন্দ্রের ভিটা, মজিদপুর, সাভার
- দেওয়ানবাড়ি মসজিদ
- আড়াপাড়া জমিদার বাড়ি
- আশুলিয়ার জলাভূমি

ধামরাই উপজেলার দর্শনীয় স্থান
- বালিয়া জমিদার বাড়ি, ধামরাই, ঢাকা
- সাইট্টা বট গাছ, সাইট্টা, যাদবপুর ইউনিয়ন, ধামরাই, ঢাকা
- খাগাইল অমৃত লাল ভক্তের আশ্রম, বাইশাকান্দা ইউনিয়ন
- ভবা পাগলার আশ্রম, আমতা, আমতা ইউনিয়ন
- গাংগটিয়া জমিদার বাড়ী, গাংগুটিয়া বাজার
- গাজীখালি নদী
- বংশাই (বংশী) নদী
- ধলেশ্বরী নদী
- কাকিলাজানি নদী
- কাজীগাং নদী
- হিরানদী
- মহাশক্তি প্রেরণ কেন্দ্র, ধামরাই, ঢাকা
- মহাম্মদী গার্ডেন, মহিশাষী বাজার, সানড়া ইউনিয়ন, ধামরাই, ঢাকা
- যশোমাধব মন্দির, ধামরাই – কালিয়াকৈর হাওয়াই, ধামরাই, ঢাকা
- সুকান্তের ধামরাই মেটাল ক্রাফট, এ ৭১ রথ খোলা, ইসলামপুর রোড, ধামরাই, ঢাকা
- সংযোগানন্দ গিরি স্মৃতি মন্দির ও পঞ্চবটী মহাশশ্মান, ওয়াহেদপুর, সুবিল ইউনিয়ন
- হযরত কালাই শাহ (রঃ) এর মাজার, ওয়াহেদপুর
- শরীফবাগ মসজিদ, শরীফবাগ, ধামরাই, ঢাকা
- আলাদ্দীন পার্ক, সীতি, ধামরাই, ঢাকা
- রোয়াইল জমিদার বাড়ি, রোয়াইল, ধামরাই, ঢাকা
- ইকবাল সাহেবের বাড়ী , সুয়াপুর ধামরাই, ঢাকা
- নান্নার কালী মন্দির, নান্নার বাজার, ধামরাই, ঢাকা
ঢাকা জেলার বিভিন্ন এলাকার ছবি: